কৃতজ্ঞতা স্বীকার
এই বইটির বিষয়ে কিছু বলা প্রয়োজন। এরকম কোনো বই সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে
কোনোদিন প্রকাশিত হয়নি। অথচ গত দীর্ঘ ছয় বছর আমরা এই ব্লগের উপস্থাপকেরা অপেক্ষা করেছি,
উদগ্রীব থেকেছি যে, কবে এই বইটা আমরা সমস্ত ব্লগবন্ধুদের সাথে ভাগ করে নিতে পারব।
আমাদের ব্লগে আত্মীয় হিসেবে ২০১৩ সালের শেষে ফরিদ আক্তার পরাগ যোগ দিলেন, আমাদের
আমন্ত্রণ জানালেন বাংলাদেশে ঘুরতে যেতে। পরের বছর শীতে সপরিবারে রাজশাহী গিয়ে তাঁর
বাসায় প্রথম এই বইটি দেখার সুযোগ হয় আমার। ছবি ও লেখায় মিশে প্রায় কমিকসের মতো এই
রকম পাতা সোভিয়েত নারী আর সোভিয়েত ইউনিয়ন পত্রিকার সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ছিল ছোটোদের
কাছে। সোভিয়েত ইউনিয়ন পত্রিকার থেকে পাতাগুলি আলাদা করে সাজিয়ে বই বানিয়ে রেখেছিলেন
তিনি। সেই মুহূর্তে সময়াভাবে এবং বড় স্ক্যানারের অভাবে স্ক্যান সম্ভব হয়নি। পরে নানাসময়ে
বইটি ভারতে পাঠানোর কথা ভাবা হয়, কিন্তু হারিয়ে যাওয়া বা সীমান্তে গোলমালে পড়ে খোয়া
যাওয়ার সম্ভাবনা এড়িয়ে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি। পৃথিবীতে এমন বই যে
কেবল একটিই। শেষে ছোটো স্ক্যানারেই প্রতি পাতা দুবার করে স্ক্যান করে এই কাজ তিনি
শেষ করলেন এই আগস্ট মাসে।
এর পাতাগুলি স্ক্যান করে ফরিদ আক্তার পরাগ বাংলাদেশের রাজশাহী থেকে ৪.১
জিবি raw scan পাঠিয়েছেন। তার আবেগটুকুও ধরা রইল এখানেই -
প্রত্যেক বাবা-মা তাদের সন্তানদের জন্য কিছু সংগ্রহ করে রেখে যান, অর্থ
দিয়ে যার মূল্যায়ন করা যায় না। ঊনিশশো সত্তর থেকে ঊনিশশো আশির দশক পর্যন্ত
বাংলাদেশে অনেক সোভিয়েত বই ও পত্রিকা আসতো। এমনি একটা পত্রিকা ছিলো ‘সোভিয়েত
ইউনিয়ন’, যা প্রতি মাসে একটি করে প্রকাশিত হতো। তার ভিতরে থাকতো শিশুদের জন্য দুটি
করে পৃষ্ঠা। সেই গল্পগুলি পড়ার জন্য আমরা উদ্গ্রীব হয়ে থাকতাম। তারপর অনেক বছর
পেরিয়ে গেছে। পত্রিকাগুলির অবস্থাও জীর্ণশীর্ণ হয়ে গেছে।
যখন আমি বাবা হলাম তখন ভাবলাম ঐ ‘সোভিয়েত ইউনিয়ন’ পত্রিকার শিশুতোষ
গল্পগুলি আমার সন্তানদের জন্য সংগ্রহ করতে পারলে ভালই হয় । তাই ৬-৭ বছরের পত্রিকা
ঘেঁটেঘেঁটে পৃষ্ঠাগুলি সংগ্রহ করে, একত্র করে অন্য কাগজের উপর আঠা দিয়ে সেঁটে, ফাইলবন্দী
বই আকারে আমার সন্তানদের উপহার দিলাম। ওরা এখন বড় হয়ে গেছে। তাই সেই সংগ্রহ
স্ক্যান করে পৃথিবীর বাংলা ভাষাভাষী সকল শিশুদের জন্যে উপহার হিসেবে পাঠালাম। বইটি
তৈরি করতে আমায় সাহায্য করেছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এম.বি.এ.-র মেধাবী ছাত্র রায়হান
উদ্দিন, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী।
“টু-পেজ আপ ভিউ” তে পড়বেন যাতে দুটো পাতা পাশাপাশি থাকে।
“শো কভার পেজ ইন টু পেজ ভিউ” তে যেন টিক দেওয়া থাকে।